সোমবার, ০২ Jun ২০২৫, ০২:৩৯ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞাপন :
সংবাদিক নিয়োগ! আপনি যদি সাংবাদিকতা এবং প্রতিবেদনে অভিজ্ঞ হন এবং ব্রেকিং নিউজ থেকে প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য আগ্রহী হন, তবে সম্মানিত সংবাদ সংস্থা তে আপনার জন্য সুযোগ আছে। সংবাদিক মান্যতা এবং প্রতিবেদন ক্ষমতা সাথে জয়েন করুন।
সংবাদ শিরোনাম
গোপালগঞ্জ ডিসি পার্ক নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন করেছেন ডিসি মুহম্মদ কামরুজ্জামান গোপালগঞ্জ কাশিয়ানীতে মধুমতি নদীতে নিখোঁজের একদিন পর লাশ উদ্ধার। খুলনা জেলার দাকোপ থানা বাৎসরিক পরিদর্শন করেন-টি,এম,মোশাররফ হোসেন করিমগঞ্জ উপজেলা মুসলিম পাড়ায় মাদ্রাসা ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, গোপালগঞ্জ ট্যাকসেস বার এসোসিয়েশন জিটিবিএ) সদস্যদের মিলন-মেলা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। জীবননগরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ইউপি সদস্য দুধবারীসহ আটক৩:ফেনসিডিল উদ্ধার। নোয়াবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের শাস্তি দাবি করে মানববন্ধন করেন, চুয়াডাঙ্গা সদর পুলিশ ফাঁড়ী বার্ষিক পরিদর্শন। কাবিখা প্রকল্পে অনিয়ম, বৃদ্ধা নারীসহ গ্রামবাসীকে মারধরের অভিযোগ নান্দাইলে। বটিয়াঘাটায় জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে বকনা গরু বিতরণ।

দুর্নীতির সাথে নারি কেলেঙ্কারির সাথেও জড়িত ফরিদপুর সেনেটারী ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদ।

বিশেষ প্রতিনিধি:-

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একজন স্যানেটারী কর্মকর্তা একই প্রতিষ্ঠানে তিন বছর থাকার কথা হলেও ফরিদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর মো:বজলুর রশিদ খান ক্ষমতা প্রয়োগ করে আইন বহিভূতভাবে প্রায় দেড় যুগ ধরে একই চেয়ারে বসে প্রতিনিয়ত দুর্নীতি করেই যাচ্ছে। একাধীক জাতীয় দৈনিক প্রত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করার কারনে বহাল তবিয়তে থেকে তিনি তার দূর্নীতি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।এমনকি সাংবাদিকরা তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করাতে বিগত সরকারের সময়ে ক্ষমতা প্রয়োগ করে দিয়েছেন প্রাণনাশের হুমকি। এছাড়াও বজলুর রশিদ কলেজ পড়ুয়া বিভিন্ন ছাত্রীদেরকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ব্লাক মেইন করে জড়িয়ে পড়েছে নারী কেলেঙ্কারিতে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক মেয়েরাই বলেন বজলুর রশিদ তাদেরকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে,এবং বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দিবেন এ কথা বলে ব্ল্যাকমেইন করে জোরপূর্বক ভাবে শারীরিক সম্পর্কের মত অনৈতিক কার্যক্রম করতে বাধ্য করে।

জানাযায় জেলা সেনিটারী ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদ ফরিদপুর জেলাশহরের এবং শহরতলীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে লেবার বডি ফিটনেস সার্টিফিকেট এবং সেনেটারী লাইসেন্সের নবায়ন ফি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্ধারন করা থাকলেও অনেকগুন বেশী টাকা আদায় করছেন। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্ধারন করা আছে লেবার বডি ফিটনেস সার্টিফিকেট জন প্রতি ১০০ টাকা আর সেনেটারী লাইসেন্সের নবায়ন ফি ১০ টাকা।

এ বিষয়ে সাংবাদিকরা সরেজমিনে ফরিদপুর জেলা শহরের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে গেলে অনেক ব্যবসায়ী অকপটে স্বীকার করেন যে জেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদ বিভিন্ন মিষ্টি দোকান, রেষ্টুরেন্ট, মুদির দোকান,বেকারী, ফুটপাতে বসা বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে স্বশরীরে হাজির হয়ে লেবার বডি ফিটনেস সার্টিফিকেট এবং সেনেটারী লাইসেন্সের নবায়ন ফি আদায় করে থাকেন।

অনুসন্ধানে গেলে ফরিদপুর জেলাশহরের টেপাখোলা রনি সুইটস এর পরিচালক রনি সাংবাদিকদের জানান , তার প্রতিষ্ঠানের ২জন কর্মচারীর লেবার বডি ফিটনেস ফিসহ সেনেটারী লাইসেন্সের নবায়ন ফি সহ ১৩০০ টাকা নিয়েছে। যেখানে সরকারী ভাবে ধার্যকরা নবায়ন ফি মাত্র ১০ টাকা।

জেলা শহরের টেপাখোলা সুমন সুইটস এর পরিচালক জানান, গত বছর ৪০০০ টাকা দিয়েছি এ বছর এমন টাকাই লাগবে বলেছে।

জেলা শহরের রাজবাড়ি রাস্তার মোড়ে রবি মিষ্টান্ন ভান্ডারের পরিচালক শুনিল জানান, লাইসেন্স করতে এবার বেশী টাকা দাবী করেছেন। দাবীকৃত টাকা পরশোধ না করলে ম্যাজিষ্ট্রেট দিয়ে জরিমানা করায়। তাই বাধ্য হয়ে যেভাবে টাকা ধার্য করে সেইভাবে পরিশোধ করি।

শহরের নতুন বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় বিসমিল্লাহ হোটেল এন্ড রেস্তোরার পরিচালক মোঃ মতিয়ার খান বলেন, আমার প্রতিষ্ঠান থেকে এ বছর জেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদকে নগদ হাতে দিয়েছি ১২০০০ টাকা। এই টাকার কোনো রশিদ আমাকে দেয় নাই।

শহরের আলীপুর মোড়ে পাচতারা হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্ট এর পরিচালক লিয়াকত হোসেন লিটন জানান, তার প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কর্মচারীর জন্য ৮০০ টাকা আর জেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদ নিজে সরেজমিনে আসায় তাকে কিছু বাড়তি টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে রশিদ প্রদান করেননি।

ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলি টেরাকোটা চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ জানান,গত বছর লেবার বডি ফিটনেস সার্টিফিকেট সহ সেনেটারী লাইসেন্সের নবায়ন ফি ১০,০০০ টাকা চেয়েছিলো জেলা সেনিটারী ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদ। অনুরোধ করে তাকে ৮০০০ টাকা দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু কোনো জমা রশিদ প্রদান করেনি। এবং এ বছর বজলুর রশিদের অনৈতিক চাহিদা পূরণ করতে না পারায় আমাদেরকে মোবাইল কোড দেখিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। যেটি আমাদের প্রতিষ্ঠানের মান ক্ষুন্ন করেছে।

এছাড়া ফরিদপুর সদর উপজেলার যে সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লিখিত অভিযোগ দিয়েছে সাংবাদিকদের কাছে
গৌতম কুমার সাহা (লক্ষী ভান্ডার) ঈশান গোপালপুর বাজার, মোঃ কামরুজ্জামান (মুদির দোকানদার)পূর্ব গঙ্গাবদ্দী দয়ানি পারা, আনন্দ সাহা (বাঁধন কৃষ্ণ ভান্ডার)ঈশান গোপালপুর বাজার, মোহাম্মদ হারুন শেখ(ভাই ভাই স্টোর)ঈশান গোপালপুর বাজার,গৌতম সরদার (ভাই ভাই মিষ্টি দোকান)বাহিরদিয়া, মোহাম্মদ খোরশেদ আলম কানাইপুর,মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সিদ্দিকী (কনফেকশনারী সুইট) কানাইপুর। এছাড়া আরো অনেক ব্যবসায়ী লিখিত এবং মৌখিক অভিযোগ করে বলেন বজলুর রশিদ ফরিদপুর থেকে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এ বিষয়ে ফরিদপুর পৌরসভার স্যানেটারী ইন্সপেক্টর মোঃ মামুন হোসেন সাংবাদিকদের জানান, আমি প্রায় দু’বছর বছর দায়িত্ব পেয়েছি কিন্তু তা পালন করতে পারছি না। কারন ফরিদপুর পৌরসভার এই জায়গাটিতে কাজ করে যাচ্ছে ফরিদপুর সিভিলসার্জন কার্যালয়ের জেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদ । আমি যেই প্রতিষ্ঠানেই যাই সেখান থেকে আমাকে বলে ফরিদপুর সিভিলসার্জন কার্যালয়ের জেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদ ভাই আপনাকে প্রতিষ্ঠানে আসতে নিষেধ করেছে। এই দায়িত্ব সিভিলসার্জন কার্যালয়ের। বিধায় কাজ না করতে পেরে আমি ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র সাহেব কে অবগত করেছি।

এ বিষয়ে ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাব বোস সাংবাদিকদের জানান,ফরিদপুর পৌরসভা এলাকার ভ্যাট, ট্যাক্স মুলত পৌরকর্তৃপক্ষ আদায় করবে কিন্তু সেখানে দীর্ঘদিন ধরে দূর্নীতি করছে ফরিদপুর সিভিল সার্জন অফিসের জেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদ। তিনি পৌর এলাকার প্রতিটা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মোটা অংকের টাকা আদায় করছে। যা আইনবিরোধী বলে মনে করি।

মেয়র আরো বলেন, আমি বিষয়টি জানার পর সিভিল সার্জনকে এবং জেলা প্রশাসক কায়ালয়ের এ ডি সিকে অবগত করেছি। কিন্তু তার পরও জেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদ তার কার্যক্রম বহাল রেখেছে। যেখানে এই দায়িত্ব পালনের কথা ফরিদপুর পৌরসভার যা কাগজে কলমে লিপিবদ্ধ রয়েছে।

দূর্নীতির নানান অভিযোগ নিয়ে জেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদ বিষয়টি অস্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, এসব মিথ্যা তথ্য। আমাকে ফাসাতে কেউ এসব রটিয়ে বেড়াচ্ছে।

এ বিষয়ে ফরিদপুর সিভিলসার্জন ডাঃ মোঃ ছিদ্দীকুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, আমি এ ঘটনার বিষয়ে অবগত হয়েছি কিন্তু কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। কেউ লিখিকভাবে অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।

উল্লেখ্য যে , ফরিদপুর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্যানেটারী ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদের বিরুদ্ধে পূর্বেও নানান অনিয়ম এবং দূর্নীতির অভিযোগে বেশ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিলো কিন্তু সেটা তার ডিপার্টমেন্ট সেই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।